অস্ট্রেলিয়ায় ১৫-১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
অস্ট্রেলিয়ায় ১৫-১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ব্রিফিংকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় মন্ত্রী দেশে লোডশেডিংয়ের ঘটনায় সমালোচনাকারীদের বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে তাকানোর আহ্বান জানান।
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় লাখ লাখ পরিবারকে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য। অস্ট্রেলিয়াতে কোনো অঙ্গরাজ্যে ১০ ঘণ্টা, কোনো অঙ্গরাজ্যে ১৫ ঘণ্টা থেকে ১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইউরোপে যেখানে কোনো সময় বিদ্যুৎ যায় না, সেখানেও লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুতের বিষয়ে ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষকে মিতব্যয়ী হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে ফ্রান্সে। এগুলো সব উন্নত দেশের কথা বলছি।
বাংলাদেশে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে ১২-১৩ বছরের কোনো ছেলেকে যদি জিজ্ঞেস করেন হারিকেন কাকে বলা হয়, সে বলতে পারবে না। হারিকেন এখন আমাদের ড্রয়িং রুমে সাজিয়ে রাখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ হারিকেনের ব্যবহার নাই।
তিনি আরও বলেন, আজ থেকে ১৩-১৪ বছর আগে হারিকেন জ্বালিয়ে অনেকে পড়তে বসতো। আমরা সরকার গঠন করার আগে বিদ্যুৎ সুবিধা পেতো বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ মানুষ। আজকে শতভাগ মানুষের দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। এখন এটি সাশ্রয়ীভাবে ব্যবহারের আহ্বান কোনোভাবেই ভুল নয়। আমি যখন রুমে থাকবো না, তখন লাইট-ফ্যান চালু রাখা, সেটি কোনোভাবেই সমীচীন নয়।
প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের আহ্বান জানিয়েছেন উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি যদি ভর্তুকি দিতে হয়, তাহলে পরিস্থিতিটা আপনারা অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন।
এসময় বিএনপির আমলে বিদ্যুৎ না পেয়ে মানুষের বিক্ষুব্ধতার বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের শিরোনাম পড়ে শোনান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, যারা মানুষের দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ দিতে পারেনি, তারা আজকে যেভাবে বড় গলায় কথা বলে, এটি তাদের মুখে মানায় না। পৃথিবীতে জ্বালানির সংকট তৈরি হয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে যে সংকট তৈরি হয়েছে, উন্নত দেশগুলোও সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের পর যেভাবে সমালোচকদের দল, যারা সব সময় যে কোনো পরিস্থিতিতে অহেতুক সমালোচনা করে এবং গুজব রটনার সঙ্গে যুক্ত হয়। করোনার টিকার সময় তাদের বক্তব্য তো গুজব রটানোর মতোই ছিল। পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু হওয়ার সময় তাদের বক্তব্য অনেকটাই গুজব রটানোর মতো ছিল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতে যে সিস্টেম লস ছিল আগে, সেটাও একটা অপচয়। সেই অপচয় অনেক কমানো হয়েছে। আগের তুলনায় সিস্টেম লস এখন বাংলাদেশে কম।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিদ্যুৎ খাতে ২৮ হাজার এবং জ্বালানি খাতে ২৫ হাজার কোটি টাকা সরকার গতবছর ভর্তুকি দিয়েছে। এই ভর্তুকি দিয়ে সারাদেশে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে ভারতের চেয়ে জ্বালানি তেলের দাম অনেক কম জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে দাম কম হওয়ায় জ্বালানি তেল ভারতে পাচার হওয়ার সব সময় একটা শঙ্কা থাকে। মাঝেমধ্যে হয় না যে, তা নয়। তবে সরকার এবং বিজিবি তৎপর।
দেশে বাক-স্বাধীনতা নেই- বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল সকাল-বিকেল যে বকবক করেন, তাহলে বাক-স্বাধীনতা নাই কোথায়?
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত