এবারের ডিসি সম্মেলনে গুরুত্ব পাচ্ছে যে ১২ ইস্যু
দুই বছর পর কাল মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) শুরু হচ্ছে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন। মহামারির কারণে পাঁচ দিনের সম্মেলন হচ্ছে তিন দিন। সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছে সবই। সম্মেলনের কাঠামোতেও আনতে হয়েছে পরিবর্তন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, এবার ডিসি সম্মেলনে ১২টি ইস্যু গুরুত্ব পাচ্ছে— ভুমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম জোরদার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স, শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়।
সূত্র আরও জানায়, অন্য বছরগুলোর ডিসি সম্মেলনে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবরা জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচি সম্পর্কে মতবিনিময় এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরামর্শ বা সুপারিশ আদান প্রদান করেন। এবার এর ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। এবার ডিসিদের সঙ্গে কর্ম অধিবেশনে মাত্র ১৫ জন মন্ত্রী ও ১৫ জন সচিব অংশ নেবেন। প্রতিবার সশরীরে প্রধানমন্ত্রী নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে ডিসিদের সঙ্গে উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দিলেও এবার তা হচ্ছে না। একইভাবে কর্ম অধিবেশনগুলো সচিবালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হলেও এবার নেওয়া হয়েছে সচিবালয়ের উল্টো দিকে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। তাতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও প্রধান বিচারপতি।
জানা গেছে, প্রতিবারের ডিসি সম্মেলনে ৬৪ জেলার ডিসি ও ৮ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার যোগ দিলেও এবার ৬৪ জন জেলা প্রশাসক ও দুজন বিভাগীয় কমিশনার সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না।
করোনা আক্রান্ত হওয়ায় রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরুল্লাহ, এবং বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান থাকছেন না সম্মেলনে। একই কারণে অনুপস্থিত থাকছেন কক্সবাজারের ডিসি মো. মামুনুর রশীদ, পটুয়াখালীর মো. কামাল হোসেন, চুয়াডাঙ্গার মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান, রাজশাহীর আব্দুল জলিল, ও লক্ষীপুরের মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসক সম্মেলন উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় যে সব বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসক আসছেন না তাদের পরিবর্তে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকরা যোগদান করবেন।
তিনি জানিয়েছেন, ডিসিদের নির্দেশনা দিয়েছি— তাদের গানম্যান, গাড়িচালক এবং সঙ্গে যারা আসবেন সবাইকে অবশ্যই আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করে আসতে হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে একাধিক জেলার ডিসি জানিয়েছেন, তারা ইতোমধ্যেই এ সম্মেলনে অংশ নিতে ঢাকার পথে রওয়ানা হয়েছেন। জেলায় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তাদের সমস্যা, চ্যালেঞ্জগুলো উপস্থাপন করবেন তারা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, এবারের ডিসি সম্মেলনে অধিবেশন হবে ২৫টি। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, স্পিকার ও বিচারপতির সঙ্গে চারটি বাদ দিয়ে কার্য অধিবেশন হবে ২১টি। ডিসি সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্য প্রস্তাব পাওয়া গেছে ২৬৩টি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৮টি প্রস্তাব ভূমি মন্ত্রণালয়ের। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ১৬টি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৪টি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ১২টি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রস্তাব পাওয়া গেছে ১০টি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত