ঐকমত্যে পৌঁছেছে জাপা-বিএনপি
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে একসঙ্গে গণআন্দোলন গড়ে তোলার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে জাতীয় পার্টি (জাফর) ও বিএনপি।
বুধবার (৮ জুন) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির(জাফর) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাকিদের এ কথা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাপা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে ফ্যাসিবাদী সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা, মানুষের অধিকার হরণ করা, বাক স্বাধীনতা হরণ করা, অর্থনীতি ধ্বংস করা, রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার যে ভয়াবহ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তার বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করে একটি কার্যকরী আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আমরা প্রায় সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলছি। তারই অংশ হিসেবে আজ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার সাহেবের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল। আমরা দেড় ঘণ্টা ফলপ্রসু আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের মূল দাবি, খালেদা জিয়ার মুক্তি, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর নামে যে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে, তারেক রহমানকে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে, সেই মামলাগুলো প্রত্যাহার, এ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করা এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর। সেই নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যামে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নতুন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নতুন সংসদ গঠন করা এবং নতুন একটি সরকার গঠন করাই আমাদের লক্ষ্য। এসব বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।
এসময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, আজ দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে একটা ব্যাপক ঐক্য গড়ে তোলার জন্য যার যা কিছু করা সম্ভব, তার সম্ভাব্য দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, বর্তমান শাসকবিরোধী যে কোনো রাজনৈতিক দল, সংগঠন, রাজনৈতিক শক্তি তাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা সম্মিলিত রাজনৈতিক আন্দোলন কর্মসূচির দিকে কীভাবে অগ্রসর হতে পারি, সে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। আমাদের সর্বপ্রথম এবং প্রধান দাবি হলো, এ সরকারের পদত্যাগ। এর বাইরে অন্য কোনো বিষয় উত্থাপন করার দাবি নেই। প্রথমত এ সরকারকে ক্ষমতা থেকে চলে যেতে হবে। তারপর নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, এ পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন দিতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা দেশের সরকারবিরোধী সমস্ত শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। সে লক্ষ্যে যে কোনো ধরনের পদক্ষেপ আমরা একসঙ্গে নেব।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী আব্বাস, সেলিম মাস্টার, অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান, মাওলানা রুহুল আমীন, যুগ্ম-মহাসচিব এএসএম শামীম, কাজী মো. নজরুল, দপ্তর সম্পাদক গোলাম মোস্তফাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এরই মধ্যে আরও পাঁচটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত