ডিমের হালি ৬০ টাকা, ডজন ১৮০
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার শামীম স্টোর। সেখানে এক হালি ডিম খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। অর্থাৎ কা। পাশের গ্রাম দক্ষিণ ওয়াহেদপুর গ্রামের মুহিব স্টোরে বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকায়।
এভাবে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার গ্রামীণ দোকানগুলোতে বেশি দামে ডিম বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি পিস ডিমে তারা ২-৬ টাকা লাভ করছেন।
শামীম স্টোরের স্বত্বাধিকারী আব্দুল করিম শামীম বলেন, ‘৪৮ টাকায় এক হালি ডিম কিনেছি। ৬০ টাকায় বিক্রি না করলে পোষাবে না। কারণ গাড়ি ভাড়া আছে। বেশি দিন থাকলে ডিম নষ্ট হয়ে যায়।’
মুহিব স্টোরের স্বত্বাধিকারী মুহিব বিল্লাহ বলেন, ‘প্রতি পিস ডিমে ৫০ পয়সা থেকে এক টাকা লাভ হলে বিক্রি করে দিই। আমার এক হালি ডিম কিনতে হয়েছে ৪৬ টাকা দিয়ে। বিক্রি করছি ৫০ টাকায়।’
মিরসরাই সদরের আব্দুর রহিম এক হালি ডিম বিক্রি করছেন তাদের তুলনায় কমে, ৪৮ টাকায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, গ্রামগঞ্জে এভাবে বেশি দামে ডিম বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। বারইয়ারহাট, মিঠাছড়া, বড়তাকিয়া, আবুতোরাব ও মিরসরাই সদরে খুচরা প্রতি পিস মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১-১২ টাকায়। তবে গ্রামীণ বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে ১২-১৫ টাকায়। অথচ খামারিরা পাইকারদের কাছে ডিম বিক্রি করছেন ১০ টাকা ৫০ থেকে ৭০ পয়সা দরে।
উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের সোনাই গ্রামের আব্দুস সালাম বলেন, ‘একেক জায়গায় একেক রেট। বারইয়ারহাটে প্রতি পিস ডিম ১১ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কয়লা বাজারে তা ১২ টাকা। ঝিলতলি বাজারে সেই ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩-১৪ টাকায়।’
উপজেলার করেরহাট একরাম পোলট্রির স্বত্বাধিকারী একরামুল হক বলেন, ‘আমার খামারে ৮ হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। প্রতিদিন ৬ হাজার ৫০০ ডিম উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি পিস ডিমে উৎপাদন খরচ পড়ছে ১০ টাকা ৫০ পয়সা। আমাদের পাইকারিভাবে ১০ টাকা ৭০ পয়সায় বিক্রি করতে হচ্ছে।’
চৌধুরী এগ্রোর স্বত্বাধিকারী সাইফুদ্দীন চৌধুরী মাসুদ বলেন, দফায় দফায় মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছি না। শুধু চলতি বছরেই প্রতি কেজি খাদ্যে দাম বেড়েছে ১৮ টাকা। ডিমের উৎপাদন খরচও অনেক বেড়ে গেছে। আমি ১০ টাকা ৬০ থেকে ৭০ পয়সা করে প্রতি পিস ডিম বিক্রি করেছি।
সাইফুদ্দিনের খামারে সাড়ে তিন হাজার মুরগী রয়েছে। প্রতিদিন ২৯০০ পিস ডিম দেয় এসব মুরগি।
তিনি বলেন, খুচরা দোকানিরা সাধারণ ভোক্তার কাছ থেকে অনেক বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। প্রতি পিস ডিমে ৪-৬ টাকা বেশি মানে মানুষের পকেট কাটার মতো।
মিরসরাইয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয় ও কর্মকর্তা না থাকায় এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তারের ফোনে একাধিকার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘প্রতি পিস ডিম খুচরা দোকানিরা ১২ থেকে ১২ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি করতে পারেন। কিন্তু ১৪-১৫ টাকা নিলে বেশি হয়ে যায়। ২৬ সেপ্টেম্বর উপজেলা সমন্বয় সভায় এ বিষয়ে ১৬ ইউনিয়নের চেয়ারম্যাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। গ্রামীণ দোকানগুলোতে অভিযান পরিচালনা করবো।’
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত