ডিসি নিয়োগ: ১৭৫ জন কর্মকর্তাকে ডাকা হচ্ছে
জেলা প্রশাসক পদে নিয়োগের জন্য ফিটলিস্ট তৈরির কাজ শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আগামী ২৭ মার্চ থেকে সাক্ষাৎকার পর্ব শুরু হচ্ছে। ১৭৫ জন কর্মকর্তাকে সাক্ষাতকারের জন্য ডাকা হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে জেলা প্রশাসক পদে ২১ ব্যাচের ১৪ জন, ২২ ব্যাচের ৩৪ জন এবং ২৪ ব্যাচের ১৬ জন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছে। তাদের মধ্যে ২১ ব্যাচের অধিকাংশ কর্মকর্তার ওই পদে কর্মকালীন সময় দুই বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এসব জেলায় শিগগিরই নতুন ডিসি পদায়ন করা হবে। নির্বাচনের আর দুই বছরেরও কম সময় বাকি রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ প্রশাসন গোছাতে শুরু করেছে সরকার।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালনকারী জেলা প্রশাসক বা ডিসিদের তালিকা চূূড়ান্ত করার কাজ শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এখন যারা ডিসি পদে নিয়োগ পাবেন তারাই মূলত নির্বাচন পরিচালনা করবেন। সেজন্য এখন ডিসি পদায়নটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে সরকার।
সূত্র জানায়, নতুন করে ডিসি ফিটলিস্ট প্রণয়নের জন্য ২৫তম ব্যাচের ১৩১ জন কর্মকর্তার ব্যাপারে সরেজমিন তদন্ত শেষ করেছে সংশ্লিষ্ট জেলার ডিসিরা। এর আগে ২৪ ব্যাচের কিছু কর্মকর্তার বিষয়ে তদন্ত করা হয়। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন নিয়োগ ও পদোন্নতি শাখা থেকে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তদন্ত যাদের বিষয়ে সরকার ইতিবাচক প্রতিবেদন পেয়েছে তাদেরকেই ডিসি ফিটলিস্টের সাক্ষাতকারের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দুই ব্যাচ থেকে মোট ১৭৫ জন কর্মকর্তা সাক্ষাতকারের আমন্ত্রণ পেয়েছেন।
জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিসিরা নির্বাচনের সময় জেলা রিটার্নিং অফিসারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। যেকোনো কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ থেকে শুরু করে বাতিল করার ক্ষমতা ডিসির হাতে ন্যস্ত থাকে। সশস্ত্রবাহিনীসহ সব ধরণের আইন শৃঙ্খলাবাহিনী থাকে রিটার্নিং কর্মকর্তা তথা ডিসিদের অধীনে। স্বাভাবিক সময়ে পুলিশ বাহিনী জেলায় স্বাধীনভাবে কাজ করলেও নির্বাচনের সময় তারা ডিসির কর্তৃত্ব মেনে চলে। ডিসিরা নির্বাচনের সময় সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করেন। এসব কারণে সব সরকার তাদের নিজস্ব ছক অনুযায়ী নির্বাচনকালীন প্রশাসন সাজিয়ে থাকে। একান্ত অনুগত ও বিশ্বস্ত কর্মকর্তাদের এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, যারা মাঠ প্রশাসনে কাজ করেছেন তাদের জন্য জেলা প্রশাসকের পদটি অবশ্যই কাক্সিক্ষত। দীর্ঘ দিন ধরে ফিটলিস্ট তৈরিতে কর্মকর্তাদের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো খবর নিচ্ছিল। বিশেষ করে ব্যক্তি ও পরিবারকেন্দ্রিক রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি এবার খুব কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ছাত্রজীবনে কর্মকর্তারা কোন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন সে বিষয়টিও সুক্ষ্মভাবে তদন্ত করা হয়েছে। নিরপেক্ষ অফিসাররা নিজেদের অবস্থান বদলাতে সময় নেন না। তাই তাদের ওপর ভরসা করতে চায় না সরকার। এবারের ডিসি ফিটলিস্টে নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার সম্ভাবনা তাই ক্ষীণ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত