প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে শিক্ষকদের সার্ভিস বই গায়েব!

| আপডেট :  ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:৫৪  | প্রকাশিত :  ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:৫৪

যশোরের শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ২২ জন শিক্ষকের সার্ভিস বই হারিয়ে গেছে। ৪৩টি সার্ভিস হারিয়ে গেলেও এক মাস পর শিক্ষা অফিসের পেছন থেকে উদ্ধার হয় ২১টি সার্ভিস বই।

শিক্ষকদের অভিযোগ, অবৈধভাবে টাকা আদায়ের কৌশল হিসেবে এ কাজ করেছে শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম নিজেই। আর শিক্ষা অফিসারের দাবি, শিক্ষকরা তাকে ফাঁসাতে সার্ভিস বুক সরিয়ে ফেলেছেন। তবে, সার্ভিস বই হারানোর দায় কেউ নিচ্ছে না। উপজেলা শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে থানায় জিডি করা হয়েছে। সার্ভিস বহি হারিয়ে শিক্ষকরা হতাশ।

যশোরের শার্শা উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৩ জন শিক্ষকের সার্ভিস বই হারিয়ে যায়। কিন্তু কবে সার্ভিস বইগুলো হারিয়েছেন তা সুস্পষ্টভাবে কেউ জানেন না। গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে কয়েকজন শিক্ষক তাদের সার্ভিস বই খুঁজতে গেলে বিষয়টি ধরা পড়ে। পরে ৪ নভেম্বর এ ব্যাপারে শার্শা থানায় একটি জিডি করেন শিক্ষা অফিসার। এর কয়েকদিন পর ২১টি সার্ভিস বই পাওয়া যায় তারই অফিসের পেছনে। এখনো পাওয়া যায়নি ২২টি সার্ভিস বই। শিক্ষা অফিসে কোন সিসি ক্যামেরাও নেই।

শিক্ষকরা বলছেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম আগে এই উপজেলায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পদোন্নতি পেয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার হয়ে তিনি পুনরায় এই উপজেলায় ফিরে আসেন ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৮ অক্টোবর। আর এসেই শুরু করেন ‘টু পাইস কামানোর কাজ’। দেশের কোন সরকারি অফিসের ৪৩ জন সরকারি কর্মচারীর সার্ভিস বই হারিয়ে যাওয়া রহস্যজনক।

শিক্ষকরা আরও বলছেন, শিক্ষকদের নবম ও দশম গ্রেড, শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা, দশ বছর পূর্তিতে স্কেল পরিবর্তনসহ অন্যান্য কাজে এই সব শিক্ষকের কাছে থেকে ঘুষ আদায় করতেই শিক্ষা অফিসার সার্ভিস বই হারিয়ে যাওয়ার নাটক সাজিয়ে থাকতে পারেন।

জানা গেছে, শার্শা উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১২৫টি। শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয় উন্নয়নে আসা স্লিপের বরাদ্দ থেকে স্কুল প্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে চলতি বছরে আদায় করেছেন। বিদ্যলয়ের ওয়াশব্লক, রুটিন মেইন্টেনেন্স, ক্ষুদ্র মেরামত, নতুন ভবন নির্মান, রেস্ট এন্ড রিক্রেয়েশন, ভ্রমন ভাতা, স্কুল কন্টিনজেন্সি, বিজয় ও শোক দিবসের বরাদ্দসহ সবখাতের জন্য নির্ধারিত পরিমান টাকা নিয়েই তবে তিনি বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করেন। এসব নিয়ে একজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাথে তার বাকবিতণ্ডা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

তবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাকে ফাঁসাতে অফিসের ও শিক্ষকদের মধ্যে কেউ এ সার্ভিস বইগুলো চুরি করেছে। সার্ভিস বই চুরি বা হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে গত ৪ নভেম্বর শার্শা থানায় একটি জিডি করেছেন তিনি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত