বাস-ট্রেন-লঞ্চ ভাড়া নিয়ে যে সিদ্ধান্ত হলো
চলমান করোনা পরিস্থিতিতে আগামী ১১ আগস্ট থেকে দেশে যত আসন তত যাত্রী পরিবহনের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। তবে তাতে আর বর্ধিত ভাড়া থাকছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমান সংখ্যক আসনে যেহেতু যাত্রী থাকবে, সেহেতু পরিবহনের বাড়তি খরচও হচ্ছে না। সে কারণে পূর্বের ভাড়া বহাল থাকবে।
তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম লঞ্চ। কর্তৃপক্ষ এখনও নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তারা বলছে, যেহেতু স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চলাচল করবে সেহেতু বর্ধিত ভাড়া বহাল থাকবে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। ভাড়া কমাতে হলে নতুন করে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, যেহেতু যত আসন তত যাত্রী সেহেতু আর বর্ধিত ভাড়া থাকবে না। আগের ভাড়ায় পরিবহন চলাচল করবে।
এছাড়া রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, আমরা কখনই রেলে ভাড়া বাড়াইনি। অর্থেক যাত্রী যখন পরিবহন করেছি তখনও পূর্বের ভাড়ায় মানুষ চলাচল করেছে। এখনও পুরোনো ভাড়াতেই রেল চলবে।
তিনি আরও বলেন, আগে তো আমরা অর্ধেক টিকিট বিক্রি করে ট্রেন চলাতাম এখন ফুল টিকিট বিক্রি করে চালাবো। এতে মাস্ক ছাড়া কেউ ট্রেনে উঠতে পারবেন না। যদি কেউ এই আইন লঙ্ঘন করেন, তাকে রেল আইনে জরিমানা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এবার শতভাগ টিকিট বিক্রি করা হবে। এতে অর্ধেক টিকিট অনলাইনে এবং অর্ধেক টিকিট কাউন্টার থাকবে। প্রাথমিক অবস্থায় ৩৮ জোড়া আন্তঃনগর ও ১৯ জোড়া কমিউটার ট্রেন চলবে।
অপরদিকে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যেহেতু স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চলার নির্দেশনা রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে গিয়ে আমরা যে ভাড়া বাড়িয়েছি সেটিই বহাল থাকবে। আমরা এখন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে আছি। ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করতে হলে তো নতুন করে একটি বৈঠক বা মিটিং করতে হবে। সে জন্য বলবো বর্ধিত ভাড়া চলমান রয়েছে।
তবে সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ বাস ও ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হলেও লঞ্চে একেবারেই তা শূন্য। তাতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। সে জন্য পুরোনো ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করা উচিত।
লঞ্চের ভাড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, লঞ্চে ভাড়া নির্ধারণ যে পদ্ধতিতে আছে সে হিসেবে কিছু আসন ফাঁকা থাকার কথা। কারণ ৩০ ভাগ আসন ফাঁকা রেখেই ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন অবৈধটাকে বৈধ করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে ভাড়া নির্ধারণ পদ্ধতিতে যেতে হবে। সেখানে একজন যাত্রী কতফুট জায়গা পাবেন তা নির্ধারণ করা আছে। সে অনুযায়ী চললেই তো স্বাস্থ্যবিধি হয়ে যায়। তাহলে আমাদেরকে কেন ভাড়তি ভাড়া দিতে হবে।
এর আগে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তাতে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে অর্ধেক গণপরিবহন চলাচলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (৮ আগস্ট) বিকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সড়ক, রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়ক পথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) অধক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দফতর/সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, গণপরিবহন, বিভিন্ন দফতর, মার্কেট ও বাজারসহ যে কোনে প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত