বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন অবৈধ মোটরসাইকেল মালিকরা
অবৈধ মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশি অভিযান পরিচালনার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
এর আওতায় হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হালনাগাদ, বৈধ কাগজপত্রহীন এবং দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে চলাচলকৃত মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
বিআরটিএ থেকে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত চিঠি হাইওয়ে পুলিশ, সব জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিআরটিএর বিভাগীয় উপপরিচালক ও সব সার্কেলের সহকারী পরিচালককে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। মোটরসাইকেল সাধারণত যুবক বা উঠতি বয়সীরা বেশি ব্যবহার করে থাকে। যাদের মধ্যে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানোর প্রবণতা অত্যধিক এবং এদের অনেকের নিকট ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে না।
বিআরটিএ’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে এ যাবত মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন সংখ্যা প্রায় ৩৬ লাখ ৫০ হাজার। পক্ষান্তরে মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের সংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ ৫০ হাজার অর্থাৎ বহুসংখ্যক অদক্ষ ও অল্প বয়সী তরুণ মোটরসাইকেল চালক ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত মোটরসাইকেল ব্যবহার করছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে মহাসড়ক ও দূরপাল্লায় দ্রুত এবং বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। মোটরসাইকেল চালনাকালে অনেক ক্ষেত্রে হেলমেটসহ নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হচ্ছে না। ফলে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মোটরসাইকেলে চালকব্যতীত একের অধিক আরোহী বহন করা হচ্ছে, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া রেজিস্ট্রেশনবিহীন বহু সংখ্যক মোটরসাইকেল অবৈধভাবে মহাসড়কে চলাচল করছে। সড়ক নিরাপত্তাকল্পে এসব অনিয়ম রোধ করা প্রয়োজন।
এ অবস্থায়, হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হালনাগাদ বৈধ কাগজপত্র (ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ট্যাক্স-টোকেন ইত্যাদি) বিহীন এবং দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে চলাচলকৃত মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং পুলিশ বিভাগের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
বাইক দুর্ঘটনা এড়াতে এর আগে গত ১৯ জুন বিআরটিএতে এক কর্মশালায় এবারের ঈদে জাতীয় মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়। তবে যেসব জাতীয় মহাসড়কের পাশে ‘সার্ভিস রোড’ রয়েছে, সেসব মহাসড়কের সার্ভিস রোডে মোটরসাইকেল চলতে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে সংস্থাটি।
আগের তিনবারের তুলনায় গত ঈদুল ফিতরের সময় সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেশি হওয়ার জন্য মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বৃদ্ধিকে দায়ী করে সুপারিশ করে বিআরটিএ।
বিআরটিএ তথ্যে দেখা যায়, ২০২১ সালের ঈদুল ফিতরে ৫৬ সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮ জনের মৃত্যু হয়। প্রতিদিন গড়ে ৭ জন নিহত হয়েছে। গত ঈদের আট দিনে ১০৬ দুর্ঘটনায় ১০৬ জনের প্রাণ গেছে। গড়ে প্রতিদিন ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত