ব্যাংকগুলো নতুন কাঠামোতে বেতন-ভাতা দিলেও ফাঁকফোকড় রয়েই গেলো
পদ্মা ব্যাংক ছাড়া বাকি সব বেসরকারি ব্যাংক নতুন বেতনকাঠামো অনুসারে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিদেশি ব্যাংকগুলোও নতুন বেতনকাঠামো কার্যকর করেছে। বেসরকারি প্রায় সব ব্যাংক নতুন কাঠামোতে ঈদের বোনাসও দিয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে পদ্মা ব্যাংক ছাড়া বাকি সব ব্যাংকই নতুন বেতনকাঠামো কার্যকর করেছে।’
অবশেষে বাধ্য হলো ব্যাংক
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, গত ১ মার্চ থেকে নতুন বেতনকাঠামো কার্যকরের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে অনেক ব্যাংক এপ্রিল থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর করে। যদিও শুরুতে ব্যাংক কর্মীদের বেতন–ভাতা বাড়ানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেওয়া সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছিল ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) ও নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)।
তবে নতুন বেতনকাঠামো বাস্তবায়ন নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও ছিল কঠোর অবস্থানে। সেই সঙ্গে ব্যাংকগুলোতে বিশেষ পরিদর্শন শুরু করে তাদের চাপে ফেলে দেয়। ফলে শেষ পর্যন্ত সব ব্যাংক ওই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের সুদহার সীমা বেঁধে দিয়ে মানতে বাধ্য করে ব্যাংকগুলোকে। সেই সাফল্যের পর নতুন বেতনকাঠামো কার্যকরেও ব্যাংকগুলোকে বাধ্য করলো।
এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যুক্তি হচ্ছে, মেধাবীরা যাতে ব্যাংকিংকে আকর্ষণীয় ক্যারিয়ার বা পেশা হিসেবে নিতে আগ্রহী হন, সে জন্যই এই পদক্ষেপ।
ফাঁকফোকড় রয়েই গেলো
এদিকে প্রায় সব ব্যাংক নতুন বেতনকাঠামো কার্যকর করলেও চাকরি ছাড়ার পরের প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা কমিয়েছে বেশ কয়েকটি ব্যাংক। ফলে ওই সব ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মাসিক বেতন-ভাতা বাড়লেও প্রকৃত আর্থিক সুবিধা বাড়েনি। বিশেষ করে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে।
আবার অনেক ব্যাংক নিয়মিত কর্মচারী ও চুক্তিভিত্তিক আউটসোর্সিং কর্মীদের বেতন বাড়ায়নি। এ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা ছিল, ‘মেসেঞ্জার, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী ও অফিস সহায়ক অথবা সমজাতীয় পদে কিংবা সর্বনিম্ন যেকোনও পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীদের শুরুতে বেতন হবে ২৪ হাজার টাকা। পাশাপাশি আউটসোর্সিং বা অন্যকোনও প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীদের বেতন নির্ধারণেও সামঞ্জস্য রাখতে হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, শিক্ষানবিশকালে সাধারণ ব্যাংকিং বিভাগের কর্মকর্তাদের ন্যূনতম বেতন-ভাতা ২৮ হাজার ও ক্যাশ বিভাগের কর্মকর্তাদের ন্যূনতম বেতন-ভাতা ২৬ হাজার টাকা। আর শিক্ষানবিশকাল শেষে সাধারণ বিভাগের কর্মকর্তাদের সর্বনিম্ন বেতন-ভাতা ৩৯ হাজার ও ক্যাশ বিভাগের কর্মকর্তাদের সর্বনিম্ন বেতন-ভাতা ৩৬ হাজার টাকা হবে। এভাবে ওপরের সারির কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতাও পুনর্নির্ধারণ করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া অফিস সহায়কদের সর্বনিম্ন বেতন-ভাতাও ঠিক করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ সব বিভাগীয় শহরে অফিস সহায়কদের সর্বনিম্ন বেতন-ভাতা ২৪ হাজার টাকা, যা জেলা শহরে ২১ হাজার টাকা ও উপজেলায় ১৮ হাজার টাকা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত