শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে শাস্তি পেলেন আওয়ামী লীগ নেতা
নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকতার হোসেনকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আকতার হোসেন ওই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। একই সঙ্গে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নড়াইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচিন কুমার চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক মো. ওমর ফারুকের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। কারণ দর্শানোর চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের এক ছাত্রের মোবাইলে স্ট্যাটাস নিয়ে এক সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। আপনি ওই কলেজের একজন শিক্ষক। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আপনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরিশেষে দেখা যায়, আপনার উপস্থিতিতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরিয়ে বের করে আনা হয় যা নিন্দনীয় ও শিক্ষকসমাজকে হেয়প্রতিপন্ন করার শামিল। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও মিডিয়ার খবরে আপনাকে জড়িত করে সংবাদ হচ্ছে। সে কারণে আপনি এর দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। আমরা মনে করি, আপনি সভাপতি হিসেবে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।’
অব্যাহতিপত্র পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে আকতার হোসেন বলেন, আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আছে, তারা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন বিশ্বাসকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের ভাষ্য, নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের এক ছাত্র ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরদিন কলেজে গেলে কিছু মুসলমান ছাত্র তাকে ওই পোস্ট মুছে ফেলতে বলে। এ সময় অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের ‘পক্ষ নিয়েছেন’ এমন রটনা ছড়িয়ে পড়লে সেখানে উত্তেজনা তৈরি হয়। উত্তেজিত ছাত্ররা অধ্যক্ষ ও দুজন শিক্ষকের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদেরও সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কলেজের কিছু ছাত্র ও স্থানীয়রা পুলিশের উপস্থিতিতে স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন। এ ঘটনায় দেশব্যাপী শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত