শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি
করোনায় ১৬ মাস ধরে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, সরকার বিনোদন কেন্দ্র খোলা ও জনসামগম করার অনুমতি দেয়নি। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে বিনোদন কেন্দ্র ও গ্যাদারিংয়ের (জনসমাগম) পারমিশন দেওয়া হয়নি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত হলে সেটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানাবে। ওনারা এটা নিয়ে আলোচনা করছেন। এর আগে ভ্যাকসিনেশন জোরদার করা হয়েছে, যাতে ছাত্রদেরও ভ্যাকসিন দেওয়া যায়। ভ্যাকসিনের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকের মিটিংয়ে আলোচনা হয়নি। উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। অর্ধেক গণপরিবহণ চলাচলের বিধি-নিষেধ কার্যকরের বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে সাজেশন দেওয়া হয়েছে অন্তত কিছুদিন যাতে কম গণপরিবহণ চলাচল করে। জেলা পর্যায়ে ডিসি, এসপি, পরিবহণ মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে বসে ঠিক করে দেবে যতগুলো বাস আছে তার অর্ধেক একদিন চলবে, পরের দিন বাকি অর্ধেক চলবে। তিনি বলেন, এটা প্রধানত আন্তঃজেলা বাসের জন্য। বাইরে থেকে কম সংখ্যক বাস ঢাকা ও চট্টগ্রামে যাতে আসে সে জন্য এ ব্যবস্থা। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শ্রমিক ইউনিয়নের মালিক শ্রমিক যারা আছে তারা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা একটা পদ্ধতি বের করবে। আমি বেজিংয়ে এমন দেখেছি। অর্ধেক বাস চলার ফলে আরও বেশি সমস্যা তৈরি হবে কিনা জানতে চাইলে সচিব জানান, একসঙ্গে বেশি গাড়ি ঢাকা বা চট্টগ্রামের দিকে না ঢুকে এজন্য এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটা লোকাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিদ্ধান্ত নেবে। সিটির ক্ষেত্রেও মেট্রোপলিটন পুলিশ ও মালিক সমিতি সিদ্ধান্ত নেবে। কোনো কিছু ভায়োলেশন হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। সবকিছু আমরা লোকাল অ্যামিনিস্ট্রেশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।
জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস ৬ অক্টোবর : বৈঠকে সাধারণ মানুষকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনকে উৎসাহিত করতে আগামী ৬ অক্টোবরকে ‘জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস’ ঘোষণা করা হয়। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এসজিজির একটা লক্ষ্যমাত্রা আছে যে ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের ৮০ শতাংশ জন্ম এবং মৃত্যু নিবন্ধন শেষ করতে হবে। এটাকে আরও কার্যকর করতে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি জানান, এর আগে ৬ অক্টোবর জাতীয় জন্ম নিবন্ধন দিবস ছিল।
জাদুঘরের নিদর্শন নষ্ট করলে ১০ বছর কারাদণ্ড : জাদুঘরের নিদর্শন নষ্ট করলে ১০ বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রেখে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আইন, ২০২১-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে সামরিক শাসনামলে জারিকৃত অধ্যাদেশগুলোকে আইনে রূপান্তরের বাধ্যবাধকতা থাকায় এটিকে আইনে রূপান্তর করা হচ্ছে। এতে নিদর্শন চুরি, পাচার বা ক্ষতি করলে ৫ বছর কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ চিড়িয়াখানা আইনে, ২০২১ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, পশু-পাখির চিকিৎসার ব্যবস্থা এ আইনে উল্লেখ রয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০২১ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আগের অধ্যাদেশকে বদলে এই আইন করা হচ্ছে। খসড়া আইনে বলা হয়েছে, এককালীন চাঁদা দিয়ে প্রাথমিকের শিক্ষকদের এই ট্রাস্টের সদস্য হতে হয়। এরপর শিক্ষকদের পাশাপাশি তাদের পোষ্যরা এখান থেকে সুবিধা পাবেন।
মালিক সমিতির বিজ্ঞপ্তি : সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি বলেছে, অর্ধেক গাড়ি চলাচল কঠিন হবে। এক মালিকের কয়টি গাড়ি আছে বা কতটি গাড়ি চালাচ্ছে দেশব্যাপী এ বিষয় নির্ণয় করা কঠিন হবে। অন্যদিকে শ্রমিকেরা বেকার থাকবে। তাদের কষ্ট লাঘব হবে না। সমিতি আরও বলেছে, অর্ধেক গাড়ি চলাচল করলে পরিবহণ সংকট দেখা দেবে এবং যাত্রীর চাপ বাড়বে। এতে সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে। মালিক নেতারা সব গাড়ি চলাচলের অনুমোদন দেওয়ার আহ্বান জানান।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত