সব প্রস্তুত থাকার পরও যে কারণে আটকে আছে নবম পে-স্কেল
সরকারি কর্মচারীদের জন্য নবম বেতন স্কেল ঘোষণার মতো পর্যাপ্ত তহবিল সরকারের হাতে নেই। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন দুই বছর ধরে স্থগিত থাকলেও আসন্ন অর্থবছরে বেতন স্কেল ঘোষণার পর্যাপ্ত অর্থ এখন নেই।
তবে ওই কর্মকর্তা দাবি করেছেন, অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন শাখা এখন ৯ম বেতন স্কেলের বাস্তবায়নের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করছে।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সারা দেশে ২১ লাখ বেসামরিক কর্মচারীর জন্য একটি নতুন বেতন স্কেল দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কোভিড -১৯ মহামারী এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরকার পর্যাপ্ত তহবিল সংগ্রহ করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, আমলাদের বেতন-ভাতা ৫০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি বিবেচনা করে তাদের বেতন-ভাতা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের অতিরিক্ত ৩০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে, আমলাদের বেতন-ভাতার বাবদ বাজেটে বরাদ্দ ছিল ২৮ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে, নতুন বেতন স্কেল পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে এ তহবিলের আকার ৪৯ হাজার ৪৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছিল।
আসন্ন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেখা গেছে যে সংশোধিত বাজেটের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় মাত্র ৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেতন বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। তবে, ওই কর্মকর্তা দাবি করেছেন, অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন শাখা এখন ৯ম বেতন স্কেলের বাস্তবায়নের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করছে। কারণ মার্চ মাসের ৬.২২ শতাংশের মূল্যস্ফীতি ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, সরকারের অর্থনৈতিক অবস্থার অগ্রগতি হলে আগামী অর্থবছরের শেষের দিকে জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগে সরকার নতুন বেতন স্কেল ঘোষণা করতে পারে।
এদিকে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমলাদের বেতনের জন্য প্রায় ৭৬,৪১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা বর্তমান অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের ব্যয় থেকে ৬,৬৬৬ কোটি টাকা বেশি।
এ খাতে প্রস্তাবিত বাজেটের ১১ দশমিক ২৭ শতাংশ ব্যয় অন্তর্ভুক্তকরা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এটি ছিল বাজেটের ১১ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
প্রতিটি বাজেটে এ খাতে বিশাল ব্যয় স্বাভাবিক ভাবেই একটি প্রশ্নটি উত্থাপন করে: সরকারী কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর সঙ্গে সেবার মান কি উন্নত হচ্ছে?
প্রতিটি মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের জন্য নাগরিক সনদের বিধানেই আমলাদের গুণগত দিকগুলো আরও উন্নত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে।
সাবেক অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরিজীবীদের সেবার কোনো উন্নতি হয়নি এতে কোনো সন্দেহ নেই। কর্মচারীদের পরিষেবার উন্নতির জন্য প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। এটি দেশের সুশাসনের উপরও নির্ভর করে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে, নতুন বেতন কাঠামোর অধীনে, বেসামরিক কর্মচারীদের মূল বেতন ১০১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল এবং পরের বছর, তাদের ভাতাও বাড়ানো হয়েছিল। অ্যাপার্টমেন্ট, গাড়ি কেনার জন্য কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সূত্র-বিজনেস ইনসাইডার
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত