দাম বাড়ার পর সব দোকানে মিলছে সয়াবিন তেল
বাজারে সংকটের মধ্যে নতুন করে দাম নির্ধারণের পরের দিনই বাজারে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে। ‘নতুন দরের’ তেল কোম্পানিগুলো এখনও বাজারজাত শুরু করেনি। তবে দোকানদাররা পুরনো তেলই নতুন দামে বিক্রি করছেন। রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতেই বোঝা যায় তেলের এই সংকট কৃত্রিমভাবে তৈরি করা। মূলত অসৎ ব্যবসায়ীরাই তেল মজুত করে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন।
রমজানের শেষ দিকে এসে দেশে নতুন করে আবারও সয়াবিন তেলের সংকট সৃষ্টি ানেহয়। সংকট মোকাবিলায় গতকাল বৃহস্পতিবার দাম পুনর্নির্ধারণ করে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৮০ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা ও পাম সুপার ১৭২ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়েছে।
শুক্রবার (৬ মে) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বেশিরভাগ এলাকার দোকানেই সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে। তেল কিনতে আসা ক্রেতারা বলছেন, ‘মূল্য নির্ধারণের পর নতুন সয়াবিন তেল এখনও বাজারেই আসেনি। অথচ আগের সয়াবিন তেলই বিক্রি হচ্ছে নতুন দরে।’ এতদিন সয়াবিন তেলের সংকট থাকলেও এখন কোথা থেকে তেল আসলো তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই।
তবে শুক্রবার (৬ মে) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বিভিন্ন বাজার ও গলির দোকানগুলোর অনেক দোকানেই পর্যাপ্ত সয়াবিন তেল দেখা গেছে। আগের বাজারজাতকৃত তেল হলেও এই তেল বিক্রি হচ্ছে নতুন নির্ধারিত মূল্যে।
মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় সব দোকনেই সয়াবিন রয়েছে। কিন্তু বিক্রি করা হচ্ছে ১৯৮ টাকা লিটার দামে। নবোদয় হাউজিং বাজারেরও প্রায় সব দোকানে সয়াবিন তেল রয়েছে।
নবোদয় হাউজিং প্রধান সড়কে আলম ব্রাদার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আলম বলেন, ‘বাজারে সয়াবিনের সংকট নেই। ঈদের আগে যে সংকট দেখা গেছে তা কৃত্রিমভাবে হয়েছিল। দাম বাড়বে জেনে অসৎ ব্যবসায়ীরা সয়াবিন দোকান থেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। আর সে কারণে প্রতি লিটার ৮০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছিল। আর কেউ কেউ বিক্রিই করেনি। যারা নির্ধারিত দামে বিক্রি করেছে তাদের সয়াবিন ফুরিয়ে যায়। কিন্তু যারা বিক্রি করেনি তাদের কাছে এখনও পর্যাপ্ত তেল রয়েছে। আজ বেশি দামে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে।
ঈদের পরে এখনও নতুন করে সয়াবিন তেল সরবরাহ করা হয়নি বলেও জানান মো. আলম।
শিয়া মসজিদ বাজারের বিক্রমপুর জেনারেল স্টোরের মালিক মো. লিটন বলেন, ‘১৯৮ টাকা লিটার দামে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে। নতুন সয়াবিন আসেনি, আগের তেলই বিক্রি করছি সরকার নির্ধারিত দামে।’
মোহাম্মদপুর এলাকার বিভিন্ন দোকানেও একই দামে সয়াবিন বিক্রি করতে দেখা গেছে। আগের সয়াবিন কেন বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে জানতে চাইলে কেউ কোনও উত্তর দিতে চাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মালিক জানান, গায়ের দামে কিনেছি তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
মিরপুর ১৩ নম্বরের মুদি দোকানদার রফিক বলেন, সয়াবিন তেল রয়েছে আমার দোকানে এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যে তা বিক্রি হচ্ছে। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে এখন তেলের বাজার কিছুটা স্বাভাবিক হবে কয়েকদিন তেলের সংকট ছিল।
মিরপুর ১ নম্বরের সিটি করপোরেশন মার্কেটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, তেলের সংকট ছিল। এখন সরকার দাম নির্ধারণ করায় অনেকে মজুত করা তেল বিক্রি করছেন। তবে তাদের স্টকে যেসব তেল ছিল, সেগুলো বাড়তি দামে বিক্রি করছে। নতুন নির্ধারিত মূল্যের দামের তেলের দুএকদিনের মধ্যেই বাজারে চলে আসবে।
এদিকে মোহাম্মদপুরের কাঁচাবাজারগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, সবজি দাম কিছুটা বেশি। তবে পটল এবং বেগুনের দাম কমেছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। টমেটোর দাম বেড়েছে কেজিতে প্রায় ৩০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে টমেটো বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
শিয়া মসজিদ বাজারের দোকানদার মনোয়ারা বেগম বলেন, টমেটোর দাম কিছুটা বেড়েছে, ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে বেগুন প্রতি কেজিতে কমেছে ২০ টাকা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত